মুক্তিযুদ্ধের টানাপোড়েনের মাঝে পড়ে যায় সম্পন্ন হিন্দু গৃহস্থ ধলা মজুমদার ও তার পরিবার। দেশভাগের পরেও বুক-ভরা আশা নিয়ে তারা রয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশে। অথচ দিনে দিনে চারধারে জেগে ওঠে অসহিষ্ণুতা, অচেনা হয়ে যায় জন্মাবধি চেনা মানুষজন। একে একে দেশত্যাগ করে অজস্র হিন্দু পরিবার; কেউ কেউ বদলে নেয় ভিটেমাটি। ধলা পারে না। কোনো ভয়ের বশে দেশত্যাগ করাকে সে মনে করে পরাজয়। মনে করে জীবনের পরম অসার্থকতা। এই ঘূর্ণির মাঝেই বিবাহযোগ্যা হয়ে ওঠে অতসী, ধলার মা সুমতির পালিতা কন্যা। জন্মসূত্রে সে মুসলমান। তাকে বিয়ে করতে চায় রতন চক্রবর্তী। সে মুক্তমনা মানুষ। এই নিয়ে ঘুলিয়ে ওঠে সমাজ। ভাইয়ের পরামর্শে জমি-বাড়ি বদলের খবর করে ধলা, কিন্তু তার মন সায় দেয় না। গভীর চিন্তাশীল মানুষ ধলা মজুমদার, একাকী সময়ে সে খুলে বসে নিভৃত নোটখাতা। সেখানে সে লিখে রাখে বিভেদের করুণ ইতিকথা, সন্ধান করে মানুষের অন্তরিন আলো-অন্ধকার। ধলা বাসন্তী সুমতি অতসী পিয়ারী রতন চক্রবর্তী ওমর বিনতা সকলকে নিয়ে প্রবাহিত হতে হতে রক্তাক্ত হয় কাল। খণ্ড খণ্ড হয় জন্মভূমি। কেবলই আরও আরও পৃথক হতে থাকে রাষ্ট্র ও দেশ।