top of page
Writer's picturemanikarnikapub

লজ্জাবতীর বাসা । বাণীব্রত গোস্বামী

Updated: Dec 24, 2021


 

সরস্বতী তখন পুকুরপাড়ে হাঁসের পিছনে ছুটছে। খামার বাড়ি থেকে মায়ের চিৎকার ভেসে আসছে, ‘এ মেয়ের ধিঙ্গিপনা আর যাবে না, যত বড় হচ্ছে লজ্জা-সরমের কোন বালাই নেই। সারাদিন রাস্তায়।’

বয়স তখন কত হবে সরস্বতীর, বড় জোর বারো। লজ্জা এসে দাঁড়িয়েছে ওর গায়ে, চুপি চুপি পায়ে। কিন্তু ওর মনে কোন জানান দেয় নি। সারাদিন মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়ায়। নাম সরস্বতী হলেও পড়াশোনার ধারে পাশ দিয়ে নেই, ও’সব ওর ভালো লাগে না। তবে...হ্যাঁ; পাখির গান ও বুঝতে পারে, গাছের কষ্ট বোঝে, ফুলের নেচে ওঠা দেখতে পায়, আর আরাম পায় বৃষ্টিতে ভিজে।‌ ওর মায়ের শুধু এক চিন্তা সারাদিন রোদে পুড়ে রঙ কালি করলে বিয়ে হবে কী করে? হাতে পায়ে যেভাবে কলা গাছের মত ঝাড়া দিয়ে বাড়ছে, তাতে একটু ধীর-স্থির না হলে এ মেয়ের বিয়ে দেওয়া যাবে! এই বয়সে গ্ৰামে-গঞ্জে মায়েদের বেশি চিন্তা থাকে, কারও সাথে ভাব-ভালোবাসা করে বাপ-মায়ে’র মুখে চুনকালি না লাগায়। এ মেয়ের মনেতো মেয়েলি ভাবের কোন চিহ্নই নেই। সাজগোজেও মন নেই।

আজও সাজতে ভালো লাগে না সরস্বতীর। মেয়ে বকুলকে সেই গল্পই করছিল সরস্বতী। তবে এখন অবশ্য ওর নাম সোরী। তখন সরস্বতীর বয়স বছর পনেরো হবে। মহুয়া কুড়োতে গিয়েছিল বাঁকাদহের জঙ্গলে। সঙ্গে ছিল মিনু আর বুলা। বড় বড় শালের গাছ, ফাঁকে ফাঁকে একটা দুটো মহুয়া। দিনের আলো শাল পাতার জাফরি দিয়ে অল্প ঝিলিক দেয়। বয়ঃসন্ধি মনে প্রেমের মত। এই ভরা ফাগুনে কখন এক টুকরো কালো মেঘ এসে আকাশের আগুন ঢেকে দেয়, নীচে থেকে বোঝা যায় না। সেদিনও তাই হয়েছিল। হঠাৎ দপ্ করে রোদ নিভে গিয়ে ঝম্ ঝম্ করে বৃষ্টি এল। মিনু আর বুলা মহুয়া ফেলে দৌড় দিল। চিৎকার করে উঠল, ‘সরু…., দৌড় লাগা, ভিজে যাবি।’

এতক্ষণ ধরে কুড়োনো মহুয়া ফেলে যেতে মন চাইল না সরস্বতীর। কোঁচড়ে মহুয়া নিয়ে কী আর দৌড়নো যায়! সারা গা তার ভিজে গেছে। জামা সপসপে হয়ে বসেছে বাড়ন্ত বয়সের ওপর। আজ আবার বৃষ্টির দোসর হয়েছে ঝোড়ো হাওয়া। বছরের প্রথয বৃষ্টি। জীবনের প্রথম প্রেমের মত। দমকা। হঠাৎ পিছনে একটা সাইকেলের আওয়াজ। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে শুভদা। মাস্টারমশাই’র ছেলে। একহাতে ছাতা আর একহাতে সাইকেল চালাচ্ছে। পিঠের পাঞ্জাবী বৃষ্টিতে ভিজে শরীর স্পষ্ট করে দিয়েছে। মনে হয় বিষ্ণুপুর কলেজ থেকে ফিরছে। জোরে হাঁক দিল, ‘এই সরু উঠৈ আয়, ভিজছিস কেন?’ এই প্রথম যেন সরস্বতীর শরীরের অলিতে গলিতে শিরায় ধমনীতে লজ্জা শিরশিরিয়ে উঠল। লাজুক হেসে দাঁড়িয়ে পড়ল। সম্বিত ফিরল শুভ’র কথায়।

‘কী... রে? দাঁড়িয়ে থাকব নাকি? আয়।’

রডের ওপর সরস্বতী বসে ছাতাটা ধরল। দুপাশে বৃষ্টিতে ভিজছে জঙ্গল, একটা সোঁদা গন্ধ উঠছে মাটি থেকে, ফাগুনের বিকেলের তাপ অনেকটা কমে আসছে। একটা হালকা শীত ভাব, একটু উষ্ণতা চাইছে। দুপাশের গাছ হাওয়ায় হাত ধরেছে এক অপরের। যেন অনেকদিন ধরে দাঁড়িয়েছিল কালবৈশাখী’র অপেক্ষায়। বৃষ্টিতে প্রেম করবে বলে। সেই ডালে ডাল মিশে যাওয়া ছাউনির তলা দিয়ে যাচ্ছে শুভ, সরস্বতী আর একটা সাইকেল। লজ্জার সাথে হাত ধরে গুটি গুটি পায়ে প্রেম ঢুকছে পঞ্চদশী’র মনে। লজ্জা আর প্রেম মাখামাখি হয়ে যাচ্ছে। আলাদা করতে পারছে না। শুধু বুঝতে পারছে ভেতরের চঞ্চল শিশুটা মরে যাচ্ছে। কৈশোরের খোলস ভেঙ্গে এক যুবতী বেরিয়ে আসছে। সন্ধেবেলা পড়ার বইয়ের অক্ষরগুলো যেন জড়ানো। রাতে যখন চাঁদটা নারকেল গাছের মাথায় নেমে আসে, জ্যোৎস্না গড়িয়ে পড়ে কার্ণিশ বেয়ে জানলায়, তখন ছোট ছোট মেঘের মত মন ভেসে চলে, বেশিক্ষণ সে আলো গায়ে মাখতে পারে না, আবার বেশি দূরেও যেতে পারে না। শুধু এপাশ আর ওপাশ। চোখে ঘুম কম, স্বপ্ন বেশি।


(২)

ভয় লাগে সরস্বতীর। কত বড় ঘরের ছেলে শুভঙ্কর। বাবা আবার হাইস্কুলের মাস্টার। নিজেও পড়াশোনায় ভালো। কলেজে পড়ে। উচ্চ-মাধ্যমিকে জলপানি পেয়েছিল। আর সেখানে সরস্বতী’র পড়াশোনার যা হাল, তাতে সামনের বছর দশ ক্লাসের গন্ডী পেরিয়ে একটা পাশ দিতে পারবে কিনা সন্দেহ। তাছাড়া আর একটা ভয়ও আছে, শুভদা নাকি কী একটা দল করে। ওসব রাজনীতির ব্যাপার সরস্বতী বোঝে না। আর তাছাড়া শুভ’র সাথে তো আর প্রেম নেই সরস্বতীর। এই বয়সে ওরকম একটু ঘেঁষাঘেঁষি হলে পরাগ মিলন হয়। তাতে প্রেমের কুঁড়ি নাও ফুটতে পারে। বিয়ের ফুলতো অনেক পরের ব্যাপার। যতই মনকে বোঝাক, গলায় ফোটা কাঁটার মত শুভদার কথাটা মন থেকে মুছতেই পারছে না। গালভরা দাড়ির সাথে আগুনের মত অথচ শান্ত দুটো চোখ শুভঙ্করের। যে মেঘে প্রচুর বৃষ্টি ভরা থাকে, সেরকম ঘন মাথার চুল। ঝড় আসার আগে শুকনো পাতা যেমন গাছের গোড়ায় ঘোরে, ঠিক সরস্বতীর প্রেমটাও পাক খাচ্ছে হঠাৎ ‘নারী’ হওয়া শরীরটাকে ঘিরে।

এভাবেই বছর দুই কেটে গেল আরও। সরস্বতীর সামনে এখন উচ্চমাধ্যমিক। মনের আশা এরপর বিষ্ণুপুর শহরে কলেজে যাবে। শুভ মুখে প্রকাশ না করলেও বোঝা যায় ‘সরু’-কেও ভালোবাসে। তবে সে ভালোবাসার নাম প্রেম কিনা সরস্বতী বুঝতে পারে না। তবুও একটা প্রেমের বীজ তার কাঁচা মনে অঙ্কুরিত হতে থাকে, ছড়াতে থাকে তার শাখা-প্রশাখা। তবে শুভদার মতিগতি কেমন যেন একটু অদ্ভুত। সরস্বতী বোঝে তার শুভদা কষ্টিপাথরে ঘষা খাঁটি সোনা। কিন্তু বড্ড বেশি আদর্শবাদী। ভারি ভারি কথা বলে। যার অর্ধেক অর্থ অজানা। সমাজ, বিপ্লব, সংগ্ৰাম এসব কথা ভালো লাগে না সরস্বতীর। পাড়ায় কারও সাথেই মেশে না শুভঙ্কর। নিজের তালেই অনেক গভীরে ডুবে থাকে।

সেদিনও ছিল এক বর্ষার রাত। সারা পাড়ায় হৈ চৈ। আস্তে আস্তে সারা গ্ৰামে ছড়িয়ে পড়ল খবরটা। রাত অনেক হয়ে গেছে। মাস্টারমশাই’র ছেলে এখনও ঘরে ফেরেনি। গ্ৰামের লোকরা অনেক খোঁজাখুঁজি করল, কোথাও পাওয়া গেল না। পরদিন সকালে পিয়ারডোবা স্টেশন থেকে একটু দূরে জঙ্গলের ধারে শুভঙ্করকে পাওয়া গেল। ততক্ষণে শুভঙ্কর অবশ্য গুলিবিদ্ধ একটা লাশ হয়ে গেছে। ছুটে দেখতে গেল সরস্বতী। উপুড় হয়ে পড়ে আছে শুভদা। যেন চুম্বন করছে নিজের মাতৃভূমিকে। রক্ত ভেসে রাস্তায় গড়িয়ে এসেছে। মনে হয় মুক্তির পথ খুঁজছে।

মনে হচ্ছে সিঁদুর ধোয়া জল। সদ্যযৌবনা এক নারীর মন থেকে সব রাঙা রঙ ধুয়ে যেন সাদা হয়ে যাচ্ছে। চারদিকে তখন শুধুই শূন্যতা। কোন সম্পর্ক নেই যার সাথে, তার জন্য চোখের জল জমে বুকে পাথর হয়ে যাচ্ছে কেন? সমাজ যারা পরিষ্কার করতে চায়, তারা নিজেরাই বোধহয় একদিন রাস্তার পাশে জঞ্জাল হয়ে পড়ে থাকে। শুভঙ্কর চিরকালের মত চলে গেল, আর সরস্বতীকে দুটো জিনিস দিয়ে গেল লজ্জা আর প্রেম।


(৩)

তবে দস্যিপনাটা হারিয়ে গেল। এখন অনেক পরিণত সরস্বতী। নিজের পড়াশোনা নিয়েই থাকত। পরের বছর কলেজে ভর্তি হল। শুভঙ্করে’র স্মৃতির ওপর ধুলো জমতে লাগল। মনের অনেক নীচে ডুবে যেতে লাগল একতরফা পুরোনো প্রেম। তবু ছাপটা চিরস্থায়ী হল। গ্ৰ্যাজুয়েট হওয়ার পর একটা সম্বন্ধ এল সরস্বতীর। ছেলে পুলিশে কাজ করে। বিষ্ণুপুর থানায়। জাঁদরেল অফিসার। ওর বাড়িতে সবার পছন্দ। সরস্বতী কেও ছেলের বাড়ির বেশ পছন্দ হল। এক ফাল্গুনে ওদের চারহাত এক হয়ে গেল। শুধু সিঁদুরের দাগটা শুভঙ্করের শরীর থেকে গড়িয়ে পড়া রক্তের ধারাটা মনে করিয়ে দিল সরস্বতীকে। কিশোরী বেলার হারিয়ে যাওয়া কত ফুল দিয়ে যেন তার খাট সাজানো। কিন্তু এ ফুলগুলো তো হাসছে না। তবে শেখর পুলিশ হলেও মানুষটা ভালো। সরস্বতীর চিবুকে হাত দিয়ে মুখটা তুলে বলল, ‘তুমি আমায় ভয় পেও না, আমি অফিসে পুলিশ, বাড়িতে কিন্ত আমি তোমার আসামী।’ কথাটা শুনে লজ্জা পেল সরস্বতী। মাথা নাড়ল। শেখর আদুরে গলায় বলল, ‘তোমার নামটা বড্ড বড়, তোমায় আমি ‘সোরী’ বলে ডাকব। তোমার আপত্তি নেই তো?’ আবার মাথা নাড়ল সরস্বতী।

তুমি কথা বলবে না।

আপনার বন্দুক আছে?

হ্যাঁ… কেন?

আচ্ছা, গুলিতে কি খু..উব ব্যথা লাগে?

হ্যাঁ, তা তো লাগবেই, তবে কেন?

না এমনিই।

তোমার বন্দুক ভয় লাগে?

না… ভয় লাগে না, তবে বন্দুক দেখলে কষ্ট হয়।

দুষ্টু লোকের হাতে বন্দুক থাকলে সেটা ভয়ের, আমাদের বন্দুক তো মানুষকে রক্ষা করার, তাতে ভয় কী?

সময় বইতে লাগল। জীবনের নিয়মে ঘনিষ্ঠ হল ওরা। পুলিশের বাহুডোরে নিশ্চিন্ত হল সোরী। একটু লজ্জা লাগল। তবে সেই ফাগুন বিকেলের দমকা হাওয়ার দিনের মত নয়। আজ তার শরীর সেদিনের মত ভিজল না। নিয়মের স্নান আর সমুদ্রস্নানের যা তফাৎ। সংসারের নিত্যকর্মে ভালই দিন কাটছিল সরস্বতীর। একদিন বন্দুকের গুলি দেখেছিল সরস্বতী। ভাবছিল এরকমই একটা গুলি, যে বুকে মাথা রাখলে পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তি, সেই বুকটাই ফুটো করে দিয়েছিল। আজ সেই গুলি আবার কারও আত্মরক্ষার কবচ। সমাজের রক্ষক তার স্বামী। তার আবার কিসের চিন্তা। এসবের মধ্যেই একদিন কোলে এল বকুল। নামটা সরস্বতীর দেওয়া। ওর প্রিয় ফুল।


(৪)

কোলকাতায় বদলি হয়ে গেছে শেখর। নিজে হাতে সমাজ অনেক পরিষ্কার করেছে শেখর। প্রোমোশন-ও পেয়েছে অনেক। এখন সে পুলিশের বড় কর্তা। সংসারে অর্থের প্রাচুর্য্য প্রয়োজনের থেকে অনেক বেশি। কোলকাতার কলেজে পড়ে বকুল। মায়ের মন সবই বোঝে। এখন ও প্রেম করছে। একটি ছেলে ইউভার্সিটিতে পড়ে। কাঁধে সাইড ব্যাগ। একমুখ দাড়ি। স্বপ্নভরা দুটো চোখ। আর আছে একটা মায়াবী হাসি। ঠিক শুভঙ্করে’র মত। একদিন বাড়ি নিয়ে এসেছিল বকুল। শেখরের কানে গেল কথাটা।

ছেলেটার নাম কৃষ্ণেন্দু। ভালো লেখালেখি করে। তবে লেখাগুলো বড় আদর্শ ঘেঁষা। সমাজ পাল্টানোর কবিতা, নতুন সূর্যের কথা। এইখানেই আপত্তি শেখরের। তার ইচ্ছে পুলিশের কোন বড় কর্তার ছেলে, অথবা কোন সরকারি চাকুরে ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দেওয়া। এইসব বুদ্ধিজীবী মার্কা ছেলে তার পছন্দ নয়। একদিন মেয়ের সাথে জোর তর্ক লেগে গেল শেখরের। মেয়ে চোখে চোখ রেখে বলল, ‘বাপি তুমি যতই বোঝাও, আমি কৃষ্ণেন্দু ছাড়া কাউকে বিয়ে করব না।’

শেখর উত্তেজিত হয়ে প্রশ্ন করে, ‘এদের জীবনের প্রতিষ্ঠা, নিরপত্তা কী আছে? এদের ওপর তুই ভরসা করিস?’

সুখ-দুঃখ, আনন্দ-কষ্ট আমরা হাসিমুখে ভাগ করে নেব।

শেখর সরস্বতীর দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলে, ‘মেয়েকে বোঝাও, এ ছেলেরও কিন্তু একদিন ঐ মাস্টারমশাই’র ছেলের মত দশা করে দেব।’

দপ্ করে জ্বলে উঠলো সরস্বতীর মাথার ভেতরটা। দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠল, ‘বকুল সাবালিকা, ওর যাকে খুশি ও বিয়ে করবে, আমি-ও দেখব কে আটকায়?’

হতভম্ব হয়ে গেল শেখর, সরস্বতীর এই রূপ সে পঁচিশ বছরে দেখেনি। মাথা নীচু করে অপরাধীর মত দাঁড়িয়ে রইল।

বকুল এখন মামারবাড়ি এসেছে। বাবা মা’র মধ্যে মনোমালিন্যটা বেশ দূরত্ব বাড়িয়েছে। হয়তো ঠিক হতে সময় লাগবে।

আজ বিকেলে মাকে দেখতে পাচ্ছে না বকুল। বকুল পায়ে পায়ে বেরোলো মামারবাড়ি থেকে। লাল মোরামের রাস্তা পেরিয়ে বাঁদিকে লাল মাটির রাস্তা ধরে একটু এগোলেই জঙ্গল। বকুল দূর থেকে দেখল একটা ছোট পাথরের ওপর বসে আছে সরস্বতী। মনে হচ্ছে এ তার মা নয়, এক মধ্য চল্লিশের পূর্ণ যুবতী। খোলা চুল পিঠ বেয়ে এলিয়ে পড়েছে। পড়ন্ত বিকেলের সিঁদুরে আভায় গালের একদিক রক্তাভ। আর একদিকে মুখের ওপর এসে পড়েছে পলাশের ছায়া। যেন একটা আদর মাখা হাত। বুলিয়ে দিয়ে বলছে, ‘সরু জীবনের দিকে তাকাও। ফিরে যাও…।’ বকুল কাছে গিয়ে আস্তে করে ডাকল, ‘মা…।’

সরস্বতী গলা তুলে ধীরে বলে উঠল, ‘ভালোবাসা দিয়ে গড়া বাসাটা খুঁজছিলাম, বোধহয় ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে, যাক গে, বাবাকে একটা ফোন কর, লোকটা একা আছে, কী করছে, কে জানে! নিজের বাড়ি ছেড়ে কোথাও ভালো লাগে না। কাল বাড়ি চলে যাব।’

মেয়ে বকুল এখন অনেক বড় হয়েছে। হেসে বলে ওঠে,‌ ‘বাব্বা! এখনও কী প্রেম!’

অনেকদিন পর আবার একবার লজ্জা পেল সরস্বতী।

 

ছবি : অভিজিৎ ভট্টাচার্য



53 views0 comments

Comentarii


bottom of page